2ছয় দিন পরে যীশু কেবল পিতর, যাকোব ও যোহনকে সঙ্গে করে চোখের আড়ালে এক উঁচু পাহাড়ের নির্জন জায়গায় নিয়ে গেলেন, পরে তিনি তাঁদের সামনে চেহারা পাল্টালেন।
3আর তাঁর জামাকাপড় চকচকে এবং অনেক বেশি সাদা হলো, পৃথিবীর কোন ধোপা সেই রকম সাদা করতে পারে না।
4আর এলিয় ও মোশি তাদেরকে দেখা দিলেন; তাঁরা যীশুর সঙ্গে কথা বলতে লাগলেন।
5তখন পিতর যীশুকে বললেন, গুরু, এখানে আমাদের থাকা ভাল; আমরা তিনটি কুটির তৈরী করি, একটা আপনার জন্য, একটা মোশির জন্য এবং একটা এলিয়ের জন্য।
6কারণ কি বলতে হবে, তা তিনি বুঝলেন না, কারণ তারা খুব ভয় পেয়েছিল।
7পরে একটা মেঘ হাজির হয়ে তাদেরকে ছায়া করলো; আর সেই মেঘ থেকে এই বাণী হল, ইনি আমার প্রিয় সন্তান, এনার কথা শোন।
8পরে হঠাৎ তাঁরা চারিদিক দেখলেন কিন্তু আর কাউকে দেখতে পেলেন না, কেবল একা যীশু তাঁদের সঙ্গে রয়েছেন।
9পাহাড় থেকে নেমে আসার দিন তিনি তাদের কঠিন আদেশ দিয়ে বললেন, তোমরা যা যা দেখলে, তা কাউকে বলো না, যে পর্যন্ত মনুষ্যপুত্র মৃতদের মধ্য থেকে জীবিত না হন।
10মৃতদের মধ্য থেকে জীবিত হওয়ার মানেটা কি এই বিষয় মৃতদের মধ্যে আলোচনা করতে লাগলো।
11পরে শিষ্যরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, তবে ব্যবস্থার শিক্ষকেরা কেন বলেন যে, প্রথমে এলিয়কে আসতে হবে?
12যীশু এর উত্তরে বললেন, “হ্যাঁ সত্যি, এলিয় আসবেন এবং সব কিছু আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনবেন আর মনুষ্যপুত্রের বিষয়ে কিভাবে লেখা আছে যে, তাঁকে অনেক কষ্ট পেতে হবে ও লোকে তাঁকে ঘৃণা করবে।”
13কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, “এলিয়ের বিষয়ে যেরকম লেখা আছে, সেইভাবে তিনি এসে গেছেন এবং লোকেরা তাঁর উপর যা ইচ্ছা, তাই করেছে। যীশুর নানারকম কাজ ও শিক্ষা অনুসারে।”
14পরে তাঁরা শিষ্যদের কাছে এসে দেখলেন, তাঁদের চারিদিকে অনেক লোক, আর ধর্মশিক্ষকেরা তাঁদের সঙ্গে তর্ক করছে।
15তাঁকে দেখে সব লোক অনেক চমৎকৃত হলো ও তাঁর কাছে দৌড়ে গিয়ে তাঁকে শুভেচ্ছা জানালো।
16তিনি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন কি বিষয়ে তোমরা তাদের সঙ্গে তর্ক বিতর্ক করছো।
17তাদের লোকদের মধ্যে একজন উত্তর করলো, হে গুরুদেব, আমার ছেলেটিকে আপনার কাছে এনেছিলাম তাকে বোবা আত্মায় ধরেছে সে কথা বলতে পারছে না;
18সেই অপদেবতা যেখানে তাকে ধরে, সেখানে আছাড় মারে, আর তার মুখে ফেনা ওঠে এবং সে দাঁত কিড়মিড় করে, আর শক্ত কাঠ হয়ে যায়; আমি আপনার শিষ্যদের তা ছাড়াতে বলেছিলাম, কিন্তু তারা পারল না।
19যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, হে অবিশ্বাসীর বংশ, আমি কত দিন তোমাদের সঙ্গে থাকবো? কত দিন তোমাদের ভার বহন করব? ছেলেটিকে আমার কাছে আন।
20শিষ্যরা ছেলেটিকে যীশুর কাছে আনলো তাঁকে দেখে সেই ভূত ছেলেটিকে জোরে মুচড়িয়ে ধরল, আর সে মাটিতে পড়ে গেলো এবং মুখ দিয়ে ফেনা বেরোতে লাগলো।
21তখন যীশু তার বাবাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ছেলেটি কত দিন ধরে এই অসুখে ভুগছে?
22ছেলেটির বাবা বললেন, ছোটোবেলা থেকে; এই আত্মা তাকে মেরে ফেলার জন্য অনেকবার আগুনে ও অনেকবার জলে ফেলে দিয়েছে; করুণা করে আপনি যদি ছেলেটিকে সুস্থ করতে পারেন, তবে আমাদের উপকার হয়।
23যীশু তাকে বললেন, তোমার যদি বিশ্বাস থাকে তবে সবই হতে পারে।
24তখনই সেই ছেলেটির বাবা চিত্কার করে কেঁদে বলে উঠলেন, আমি বিশ্বাস করি, আমাকে অবিশ্বাস করবেন না।
25পরে লোকেরা একসঙ্গে দৌড়ে আসছে দেখে যীশু সেই অশুচি আত্মাকে ধমক দিয়ে বললেন, হে বোবা আত্মা, আমি তোমাকে আদেশ করছি, এই ছেলের শরীর থেকে বেরিয়ে যাও, আর কখনও এর শরীরের মধ্যে আসবে না।
26তখন সে চেঁচিয়ে তাকে খুব জোরে মুচড়িয়ে দিয়ে তার শরীর থেকে বেরিয়ে গেল; তাতে ছেলেটি মরার মতো হয়ে পড়ল, এমনকি বেশিরভাগ লোক বলল, সে মরে গেছে।
27কিন্তু যীশু তার হাত ধরে তাকে তুললো ও সে উঠে দাঁড়ালো।
28পরে যীশু ঘরে এলে তাঁর শিষ্যেরা গোপনে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, আমরা কেন সেই বোবা আত্মাকে ছাড়াতে পারলাম না?
29তিনি বললেন প্রার্থনা ছাড়া আর কোনো কিছুতে এটা হওয়া অসম্ভব।
30সেই জায়গা থেকে যীশু গালীলের মধ্য দিয়ে চলে গেলেন, আর তাঁর ইচ্ছা ছিল না যে, কেউ তা জানতে পারে।
31কারণ তিনি নিজের শিষ্যদের উপদেশ দিচ্ছিলেন, তিনি তাঁদের বললেন, মনুষ্যপুত্র লোকদের হাতে সমর্পিত হবেন এবং তারা তাঁকে মেরে ফেলবে। আর তিনি মারা যাবার তিনদিন পর আবার বেঁচে উঠবেন।
32কিন্তু তারা সে কথা বুঝতে পারল না এবং যীশুকে কিছু জিজ্ঞাসা করতে শিষ্যরা ভয় পেল।