1তখন নূনের পুত্র যিহোশূয় শিটীম থেকে দুই জন গুপ্তচরদেরকে গোপনে এই কথা বলে পাঠালেন, “তোমরা যাও, ঐ দেশ, বিশেষ করে যিরীহো নগরকে ভালো করে পর্যবেক্ষণ কর।” তখন তারা রাহব নামের এক বেশ্যার বাড়িতে গেলেন ও সেই জায়গায় বিশ্রাম করলেন।
2আর লোকেরা যিরীহোর রাজাকে বলল, “দেখুন, দেশ অনুসন্ধান করতে ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে থেকে কয়েকটা লোক আজ রাতে এই জায়গায় এসেছে।”
3তখন যিরীহোর রাজা রাহবের কাছে এই কথা বলে পাঠালেন, “যে লোকেরা তোমার কাছে এসেছে ও তোমার বাড়িতে প্রবেশ করেছে, তাদেরকে বাইরে নিয়ে এস, কারণ তারা সমস্ত দেশটাকে অনুসন্ধান করতে এসেছে।”
4তখন সেই মহিলাটি ঐ দুই জনকে লুকিয়ে রাখলেন এবং বললেন, “সত্যই, সেই লোকেরা আমার কাছে এসেছিল; কিন্তু তারা কোথাকার লোক, তা আমি জানতাম না।
5অন্ধকার হলে, নগরের দরজা বন্ধ করার একটু আগেই সেই লোকেরা চলে গেছে, তারা কোথায় গেছে, আমি জানি না; এখনই যদি তাদের অনুসরণ কর, তবে হয়ত তাদের ধরতে পারবে।”
6কিন্তু মহিলাটি তাদেরকে ছাদের উপরে নিয়ে গেলেন ও ছাদের উপরে সে তাঁর সাজানো শন এর ডাল পালার মধ্যে লুকিয়ে রেখেছিলেন।
7ঐ লোকেরা তাদের অনুসরণ করে যর্দ্দনের পথে, যেখান দিয়ে হেঁটে পার হওয়া যায় সেই পর্যন্ত তাড়া করল এবং যারা তাদের তাড়া করার জন্য অনুসরণ করতে গেল, সেই লোকেরা বাইরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নগরের দরজা বন্ধ হল।
8সেই দুইজন গুপ্তচর ঘুমাতে যাওয়ার আগে ঐ মহিলাটি ছাদের উপরে তাদের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন,
9আর তাদেরকে বললেন, “আমি জানি, সদাপ্রভু তোমাদেরকে এই দেশ দিয়েছেন, আর তোমাদের কাছ থেকে আমাদের উপরে মহাভয় উপস্থিত হয়েছে ও তোমাদের সামনে এই দেশের বসবাসকারী সমস্ত লোক গলে গিয়েছে (খুব ভয় পেয়েছে)।
10কারণ মিশর থেকে যখন তোমরা বার হয়ে এসেছিলে তখন সদাপ্রভু তোমাদের সামনে কেমনভাবে সূফসাগরের (লোহিত সাগরের) জল শুকিয়ে দিয়েছিলেন এবং তোমরা যর্দ্দনের অন্য পারে সীহোন ও ওগ নামে ইমোরীয়দের দুই রাজার প্রতি যা করেছিলে, যাদের তোমরা সম্পূর্ণ ধ্বংস করেছিলে, তা আমরা শুনেছি;
11আর শোনার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের হৃদয় গলে গেল; তোমাদের জন্য আর কারো মনে সাহস থাকল না, কারণ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যিনি উপরে স্বর্গে ও নিচে পৃথিবীতে ঈশ্বর।
12তাই এখন, অনুরোধ করি, তোমরা আমার কাছে সদাপ্রভুর নামে শপথ কর, আমি তোমাদের উপরে দয়া করেছি, তার জন্য তোমরাও আমার বংশের উপরে দয়া করবে এবং একটা নিশ্চিত চিহ্ন আমাকে দাও৷
13অর্থাৎ তোমরা আমার মা, বাবা, ভাই, বোন ও তাদের সমস্ত পরিজনকে বাঁচাবে ও মৃত্যু থেকে আমাদের প্রাণ উদ্ধার করবে।”
14সেই দুই জন তাঁকে বলল, “তুমি যদি আমাদের এই কাজ প্রকাশ না কর, তবে তোমাদের পরিবর্ত্তে আমাদের প্রাণ যাক; যে দিনের সদাপ্রভু আমাদের এই দেশ দেবেন, আমরা তোমার প্রতি দয়াময় ও বিশ্বস্ত হব।”
15পরে সে জানালা দিয়ে দড়ির মাধ্যমে তাদেরকে নামিয়ে দিলেন, কারণ তার বাড়ি নগরের দেওয়ালের গায়ে ছিল, সে দেওয়ালের উপরে বাস করত।
16আর সে তাদেরকে বলল, “যারা তাড়া করার জন্য গিয়েছে, তারা যেন তোমাদের ধরতে না পারে, এই জন্য তোমরা পর্বতে যাও, তিন দিন সেই জায়গায় লুকিয়ে থাক, তারপর যারা তাড়া করতে গিয়েছে, তারা ফিরে এলে তোমরা নিজেদের পথে চলে যেও।”
17সেই লোকেরা তাঁকে বলল, “তুমি আমাদের যে দিব্য করেছ, সে বিষয়ে আমরা নির্দোষ হব।
18দেখ, তুমি যে জানালা দিয়ে আমাদের নামিয়ে দিলে, আমাদের এই দেশে আসার দিনের সেই জানালায় এই লাল রঙের দড়িটা বেঁধে রাখবে এবং তোমার মা-বাবা, ভাইয়েদের এবং তোমার সমস্ত বংশকে তোমার বাড়িতে একত্র করবে।
19তখন এইরূপ হবে, যে কেউ তোমার বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তায় যাবে, তার রক্তপাতের দায়ী সে নিজেই হবে এবং আমরা নির্দোষ হব; কিন্তু যে কেউ তোমার সঙ্গে বাড়ির মধ্যে থাকবে, আর তাকে যদি কেউ হত্যা করে, তবে তার রক্তপাতের দায়ী আমরা হব।
20কিন্তু তুমি যদি আমাদের এই কাজ প্রকাশ করে দাও, তবে তুমি আমাদের যে শপথ করিয়েছ, তা থেকে আমরা মুক্ত হব।”
21তখন সে বলল, “তোমরা যেমন বললে, তেমনই হোক।” পরে সে তাদেরকে বিদায় করলে তারা চলে গেল এবং সে ঐ লাল রঙের দড়ি জানালায় বেঁধে রাখল।
22আর তারা পর্বতে উপস্থিত হল, যারা তাড়া করার জন্য গিয়েছিল, তাদের ফিরে আসা পর্যন্ত তিন দিন সেখানে থাকল; তার ফলে যারা তাড়া করার জন্য গিয়েছিল, তারা সমস্ত রাস্তায় তাদের খোঁজ করেও কোন সন্ধান পেল না।
23পরে ঐ দুই ব্যক্তি পর্বত থেকে নেমে এল ও পার হয়ে নূনের ছেলে যিহোশূয়ের কাছে গেল এবং তাদের প্রতি যা কিছু ঘটেছিল, তার সমস্ত বৃত্তান্ত তাঁকে বলল।
24তারা যিহোশূয়কে বলল, “সত্যই সদাপ্রভু এই সমস্ত দেশ আমাদের হাতে সমর্পণ করেছেন এবং দেশের সমস্ত লোক আমাদের সামনে গলে গিয়েছে।”